পোস্টগুলি

জুন, ২০১২ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

হাকালুকি হাওর

ছবি
হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ হাওর।  এর আয়তন ১৮,১১৫ হেক্টর। এটি মৌলভীবাজার ও সিলেট জেলায় অবস্হিত। মৌলভীবাজারের বড়লেখা, জুরী, কুলাউড়া এবং সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় এর বিস্তৃতি। ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের কারণে উজানে প্রচুর পাহাড় থাকায় হাকালুকি হাওরে প্রায় প্রতি বছরই আকষ্মিক বন্যা হয়। শীতকালে এ হাওড়কে ঘিরে পরিযায়ী পাখিদের বিচরণে মুখর হয়ে উঠে গোটা এলাকা।  বর্ষাকালে বিস্তৃত জলরাশি এ হাওরের রূপ ঠিক যেন ভাসমান সাগর। আদিগন্তু বিস্তৃত জলরাশি। জলের মাঝে মাঝে দুই-একটি বর্ষীয়ান হিজল, তমাল বৃক্ষ। অথচ শীতকালে বিস্তৃত এই হাওর ধু-ধু সবুজপ্রান্তর, কোথাও বা ধান ক্ষেত এবং খানাখন্দ নিচু ভূমিতে প্রায় ২৩৮ টি বিলের সমষ্টি। হাকালুকি হাওর মাছের জন্য প্রসিদ্ধ। হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের সংরক্ষিত জলাভূমি। শীত মৌসুমে এশিয়ার উত্তরাংশের সাইবেরিয়া থেকে প্রায় ২৫ প্রজাতির হাঁস এবং জলচর নানা পাখি পরিযায়ী হয়ে আসে। এছাড়া স্থানীয় প্রায় ১০০ প্রজাতির পাখি সারাবছর এখানে দেখা মেলে। হাওরে প্রায় ২৩৮টি বিল রয়েছে। বিলগুলিতে প্রায় সারাবছর পানি থাকে। হাওরের জলরাশ...

বারেকটিলা / যাদুকাটা, সুনামগঞ্জ

ছবি
 সুনামগঞ্জ শহর থেকে ২০ কিলোমিটার এবং তাহিরপুর উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে তাহিরপুরের সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়া পাহাড় ঘেঁষে অবস্থিত বারিক টিলা ও তার পাশ দিয়ে প্রবাহিত পাহাড়ি নদী যাদুকাটা যেন নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। প্রাচীন বাংলার প্রথম রাজধানী লাউড়ের তীরে অবস্থিত সুনামগঞ্জের সীমান্তনদী যাদুকাটাকে বলা হয় রূপের নদী। বর্ষায় পাহাড়ি নদী যাদুকাটার বুকে স্রোতধারা আর হেমন্তে শুকিয়ে যাওয়া যাদুকাটার বুক জুড়ে ধু-ধু বালুচর এবং পার্শ্বস্থ ভারতের সারি-সারি উচু-নিচু মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়া পাহাড় ও বাংলাদেশের বারিকটিলার সবুজ বনায়ন মাটিয়া পাহাড় এখানে আসা লোকজনের দৃষ্টি কেড়ে নেয়। বারিকটিলার উপর দাঁড়ালে একদিকে চোখে পড়ে হাওর ও অন্যদিকে সারি সারি পাহাড়। এ মনোরম দৃশ্য যে কারোরই মন কেড়ে নেয় সহজেই। যাদুকাটা ও বারেকটিলার নয়নাভিরাম দৃশ্যকে নিয়ে রয়েছে পর্যটন শিল্পের এক উজ্জ্বল সম্ভাবনার হাতছানি। যাদুকাটা যেমনি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দিয়ে শোভামণ্ডিত করেছে এলাকার নান্দনিকতা তেমনি যাদুকাটার বালি ও পাথর উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক...

কাপ্তাই হ্রদ

ছবি
হ্রদের শান্ত পানি ঘিরে সবুজ পাহাড়। আঁকাবাঁকা সর্পিল পথের এক পাশে উঁচু-নিচু পাহাড়, অন্য পাশে বিস্তীর্ণ লেক। তাতে নীলাভ জলরাশি। সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের মতো নয়; এ জল শান্ত, স্বচ্ছ ও শীতল। যত দূর দৃষ্টি যায়, মনে হবে, কোনো নিপুণ শিল্পীর তুলির আঁচড়ে আঁকা অপরূপ এক ছবি। চিত্রটি চট্টগ্রাম পার্বত্য এলাকা কাপ্তাইয়ের।

গজনীতে বনভোজন

ছবি
সবুজ পাহাড়, টলটলে হ্রদের মাঝে অবকাশকেন্দ্র এমন একটা সময় ছিল, যখন ‘শেরপুর’ বলতে সবাই জানতে চাইতেন, কোন শেরপুর? ময়মনসিংহ, বগুড়া না সিলেটের শেরপুর? কিন্তু এখন সেই দ্বিধার জায়গা অনেকটা পরিষ্কার। গজনী অবকাশকেন্দ্র শেরপুরের পরিচিতি বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক। ১৯৯৩ সালে শেরপুরের তৎকালীন জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে গড়ে ওঠে এটি। শেরপুর জেলা সদর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের পাদদেশে এর অবস্থান। বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও উত্তরাঞ্চলের প্রধান ও আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে এটি। গজনী এলাকাটি ব্রিটিশ আমল থেকেই পিকনিক স্পট বা বনভোজনের জায়গা হিসেবে পরিচিত। মনোরম পাহাড়ি শোভামণ্ডিত গজনী এলাকায় একটি পুরোনো বটগাছের পূর্বদিকে আনুমানিক ২০০ ফুট উঁচু পাহাড়ের টিলায় নির্মাণ করা হয়েছে তিনতলা অবকাশভবন। সেই সঙ্গে এলাকার প্রাচীন বটগাছের বিশাল গোলচত্বরটি পাকা করা হয়েছে। ছটির দিনে বিশাল বটগাছের ছায়ায় চলে আড্ডা। গারো উপজাতি-অধ্যুষিত গারো পাহাড়ের পাদদেশে স্বচ্ছ পানির হ্রদ ও দিগন্তছোঁয়া সবুজ বনানীই এই এলাকার বৈশিষ্ট্য। এর মাঝে গড়ে ওঠা গজনী অবকাশকেন্দ্রে রয়েছে ছয় কক্ষের তিনত...

নাটোরে কবিগুরুর স্মৃতি

ছবি
কুঠিবাড়ীর মূল ফটক। পিতার আদেশ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কলকাতায় সেরেস্তায় বসে জমিদারি শিখতে হলো। একেবারে কেরানি থেকে শুরু করে নায়েবের কাজ পর্যন্ত। শিক্ষা শেষে তিনি পূর্ববঙ্গে পাড়ি দেন। এখানে তাঁদের তিনটি পরগনা—নদিয়া জেলার বিরাহিমপুর, যার কাছারি শিলাইদহ; পাবনা জেলার শাহজাদপুর আর রাজশাহী জেলার কালিগ্রাম, যার কাছারি হলো পতিসর। নাগর নদের তীরে অবস্থিত পতিসর নওগাঁ জেলার আত্রাই থানায় অবস্থিত। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নদীপথে পতিসর আসতেন। নাগর নদে বজরায় বসে তাঁর সাহিত্যচর্চা চলত। আর পতিসরে কুঠিবাড়ীতে চলত খাজনা আদায়। খাজনা আদায়ের দায়িত্বে ছিলেন তাঁর ভাগনে বীরেন্দ্রনাথ। পতিসরে কবি প্রথম আসেন ১৯১১ সালে। এখানে কবির বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য রচনা হলো খেয়া, চৈতালী, চিত্রা, আকাশ প্রদীপ, বিদায় অভিশাপ, গোরা, ক্ষণিকা ইত্যাদি। তিনি এখানকার গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রজাদের দুঃখ-কষ্ট দেখে তা দূর করার চেষ্টা করেছেন। ১৯৩৭ সালে তিনি পতিসর ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় সব সম্পদ প্রজাদের মধ্যে দান করে দেন। এবার নাটোরে গিয়ে রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ী দেখতে পতিসর যাব ঠিক করলাম। নাটোর থেকে পতিসর খুব দূরের পথ নয়। নাটোরের নজরু...

পানাম নগর

ছবি
পানাম নগর   পানাম নগর নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁতে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন শহর। এখানে কয়েক শতাব্দী পুরনো অনেক ভবন রয়েছে, যা বাংলার বার ভূইয়াঁদের ইতিহাসের সাথে সম্পর্কিত। সোনারগাঁর ২০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই নগরী গড়ে ওঠে। সোনারগাঁ লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর থেকে উত্তর দিকে[৩] হাঁটাপথেই পৌঁছানো যায় অর্ধ্বচন্দ্রাকৃতি পানাম পুলে। (যদিও পুলটি ধ্বংস হয়ে গেছে)। এই পুল পেরিয়েই পানাম নগর এবং... নগরী চিরে চলে যাওয়া পানাম সড়ক। আর সড়কের দুপাশে সারি সারি আবাসিক একতলা ও দ্বিতল বাড়িতে ভরপুর পানাম নগর। ১৫ শতকে ঈসা খাঁ বাংলার প্রথম রাজধানী স্থাপন করেছিলেন সোনাগাঁওয়ে। পূর্বে মেঘনা আর পশ্চিমে শীতলক্ষ্যা নদীপথে বিলেত থেকে আসতো বিলাতি থানকাপড়, দেশ থেকে যেতো মসলিন। শীতলক্ষ্যা আর মেঘনার ঘাটে প্রতিদিনই ভিড়তো পালতোলা নৌকা। প্রায় ঐসময়ই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর বাণিজ্যিক কার্যক্রম ও চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে ইউরোপীয় অনুপ্রেরণায় নতুন ঔপনিবেশিক স্থাপত্যরীতিতে গড়ে উঠে পানাম নগরী।[৪] পরবর্তিতে এই পোষাক বাণিজ্যের স্থান দখল করে নেয় নীল বাণিজ্য। ইংরেজরা এখানে বসিয়েছি...